২০২০ সালের ৩ জুলাই কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক এস এম নুরুদ্দীন আবু আল বাকীর করোনা শনাক্ত হয়। তাঁর অবস্থার অবনতি হলে ওই দিন রাতেই ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উক্ত হাসপাতলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বছরের ১৭ জুলাই গভীর রাতে তিনি মারা যান। এরপর তাঁর লাশ মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।
কুষ্টিয়ায় মৃত এই চিকিৎসককে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ থেকে তাঁর নিজের জেলা মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে পদায়ন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, করোনা অতিরিক্ত মহামারীতে ডাক্তার নুরুদ্দীন মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে করোনা ইউনিটে দায়িত্ব পালন করবেন। বুধবারের মধ্যে তাঁকে সেখানে যোগদানের কথা বলা হয়েছে।
অপর দিকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে একসময় কর্মরত থাকা আজফার উদ্দীন শেখ নামের এক চিকিৎসককে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে করোনা ইউনিটে পদায়ন করা হয়েছে। কিন্তু আজফার উদ্দীন বর্তমানে আর চাকরিতে নেই। গত বছর তাঁকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপসচিব জাকিয়া পারভীন এ প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন বুধবারের মধ্যে তাঁদের পদায়নকৃত কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়।
মেডিকেল কলেজ সূত্র জানায়, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ থেকে একসঙ্গে ৪৮ চিকিৎসককে কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ জেনারেল হাসপাতালে সংযুক্তির প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে জারি হওয়া প্রজ্ঞাপনে এসব পদায়ন করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘কোভিড-১৯ অতিমারি সুষ্ঠুভাবে মোকাবিলা এবং জনসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নিম্নে বর্ণিত স্বাস্থ্য বিসিএস স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সংযুক্তিতে পদায়ন করা হলো।’ রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপসচিব জাকিয়া পারভীন এ প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন। কাল বুধবারের মধ্যে তাঁদের পদায়নকৃত কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রজ্ঞাপনের তালিকা ঘেঁটে দেখা যায়, করোনায় প্রয়াত হওয়া চিকিৎসক নুরুদ্দীন আবু আল বাকী ও চাকরি হারানো আজফার উদ্দীনকে পদায়ন করা হয়েছে। করোনা ডেডিকেডেট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবদুল মোমেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে এ তালিকায় ওই দুই চিকিৎসকের নাম দেখে স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও কুষ্টিয়া নাগরিক কমিটির সভাপতি এস এম মুসতানজীদ বলেন, প্রজ্ঞাপন দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অবস্থা কতটা বেহাল। তারা কতটা অদক্ষ। সেখানে এত সচিব, উপসচিব, শতাধিক কর্মকর্তা–কর্মচারী কী কাজ করেন! একটা প্রজ্ঞাপনের আগে যাচাই–বাছাই না করেই প্রজ্ঞাপন জারি করেন।