প্রতিবাদী কণ্ঠ ডেস্ক : টিউবের মতো লম্বা বড় আকারের বস্তা, তাতে বালি ভরে ফেলা হচ্ছে পদ্মায়। একেকটি টিউবে বালি থাকছে ১২ থেকে ১৫ টন পর্যন্ত। ওজনে বেশি থাকায় স্রোতে ভেসে যাবে না এসব টিউব, প্রতিরোধ করবে ভাঙন- বলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার সাহেবনগরে যেখানে পদ্মার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে সেখানে এই জিও-টিউবে প্রতিরোধ কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন কুষ্টিয়া সদর আসনের এমপি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।
এ উপলক্ষ্যে নদীপাড়ে আয়োজন করা হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের। সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন, কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
এবার বর্ষায় পদ্মায় পানি বাড়লে কুষ্টিয়ার মিরপুর ও ভেড়ামারা উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ভাঙন শুরু হয়। আর শুষ্ক মৌসুমে পানি নেমে যাওয়ার সময় আবার ভাঙন তীব্র হয়। ভাঙনে কোন কোন এলাকার এক কিলোমিটার কৃষি জমি, বাড়িঘর ও বালু ঘাট নদীতে চলে গেছে। আর মাত্র ১০ মিটার দূরে আছে কুষ্টিয়া-ইশ্বরদী জাতীয় মহাসড়ক। স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে ভাঙন প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে জিও-টিউব ও জিও্র বস্তা ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। সেই কার্যক্রম উদ্বোধন করতে শনিবার দুপুর ১২টায় কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার সাহেবনগরে আসেন মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি। তিনি অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার আগে ট্রলার চালিত নৌকাযোগে পদ্মা নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এ সময় হানিফ আরো বলেন, ঘুরে না দেখলে বুঝতেই পারতাম না ভাঙন এতোটা তীব্র। একজন কলাচাষীর ৮০বিঘা ক্ষেতের মধ্যে ৭৮ বিঘাই নদীগর্ভে চলে গেছে। এখানকার ভাঙনের খবর প্রধানমন্ত্রীও জানেন। নদী ভাঙ্গন রোধে ইতিমধ্যেই সরকার তড়িত উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আগামীতে এখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হবে বলেও তিনি ঘোষণা দেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল হেকিম বলেন, স্থায়ী বাধ নির্মাণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। এটি হাজার কোটি টাকার কাজ। তাই স্ট্যাডি হবে। প্রকল্প পাশ হতে সময় লাগবে। কিন্তু ভাঙন প্রতিরোধ করা জরুরি। এ কারণে প্রথমে জিও-টিউব ও পরে জিও ব্যাগ ফেলে একটি প্রতিরোধ ব্যুহ তৈরির কাজে হাত দেয়া হয়েছে। এটি বিজ্ঞানসম্মত ও পরিক্ষিত। আশা করা যায় প্রকল্পের কাজ শুরু করার আগ পর্যন্ত ভাঙন প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
স্থানীয়রা যারা ভাঙনে নি:স্ব হয়েছেন তাদের জন্য সরকারের কাছে আর্থিক সুবিধার দাবি জানিয়েছেন মিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান কামারুল আরেফীন।