কুষ্টিয়ায় সর্বাত্মক লকডাউনের ১৭ তম দিন বুধবার। ৭ তারিখ বুধবার দিবাগত রাত বারোটা থেকে আগামী ১৪ তারিখ রাত বারোটা পর্যন্ত পুনরায় এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। লকডাউনের ১৭ দিন ধরে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপার খাইরুল আলম তার সহকর্মী, পুলিশের আরো কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যদের নিয়ে দিনরাত নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
পুলিশ সুপার লকডাউন বাস্তবায়ন ও করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের ব্যানার ,স্টিকার লাগিয়ে প্রতিদিন কুষ্টিয়া পুলিশ লাইন্স হতে বর্ণাঢ্য মোটর শোভাযাত্রার মাধ্যমে র্যালি বের করেছেন জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য। পুলিশ সুপার কুষ্টিয়ার প্রতিটি থানার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট প্রদক্ষিন করেন। পুলিশ সুপার কুষ্টিয়ার সকল থানার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে উপস্থিত জনগণের উদ্দেশ্যে সাংবাদিকদেরকে ব্রিফ করেন।
এ সময় তিনি বলেন বাংলাদেশ পুলিশের সম্মানিত ইন্সপেক্টর জেনারেল মহোদয়ের নির্দেশনায় বাংলাদেশের সকল জেলা পুলিশ, মেট্রোপলিটন পুলিশসহ পুলিশের সকল ইউনিট করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে লকডাউন প্রতিপালন, স্বাস্থবিধি মেনে চলা, শারীরিক দূরত্ব মেনেচলা ও মাক্স পরা উদ্বুদ্ধ করনণের কাজ করে যাচ্ছে।
পুলিশ সুপার খাইরুল আলম আরো বলেন, বর্তমানে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ চলছে এবং ভারতের ডেল্টা ভেরিয়েন্ট বাংলাদেশে সনাক্ত হয়েছে যার সংক্রমণের মাত্রা উর্ধগতি ও মৃত্যুর হারও বেশী। এ কারণে দেশের মানুষের মঙ্গলের কথা চিন্তা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশে সর্বাত্মক লকডাউন দিয়েছেন। কুষ্টিয়া জেলায় মটর শোভাযাত্রা র্যালির মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করা, লকডাউন বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানুষকে ঘরে রাখতে বাধ্য করা ও সঠিক নিয়মে মাস্ক পরার অভ্যাস করানোই ছিল মূল উদ্দেশ্য। তিনি আরো বলেন, প্রত্যেকে ভ্যাক্সিনের আওতায় না আসা পর্যন্ত করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে আমাদের সঠিক নিয়মে মাক্স পরে যেতে হবে। এই মুহুর্তে স্বাস্থবিধি মেনে চলা ও মাস্কই করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাক্সিনের মত উপকারে আসবে।
বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কুষ্টিয়ায় সর্বাত্নক লকডাউনের ১৭তম দিনে লকডাউন বাস্তবায়নে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোঃ খাইরুল আলমের নেতৃত্বে সাধারণ লোকদের ঘরে রাখতে জেলা পুলিশ কুষ্টিয়ার সকল সিনিয়র অফিসার ও ফোর্সের মধ্যে কঠোর ভাবে কড়া নজরদারি করার প্রবনতা লক্ষ্য করা গেছে। কুষ্টিয়া জেলার সাত থানার সীমান্তবর্তী ও পৌর এলাকার চেকপোস্টে কঠোর ভাবে পুলিশি নজরদারী থাকায় আন্তঃজেলা ও আভ্যন্তরীণ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় শহরের ব্যস্ততম সড়ক গুলোতে দেখাগেছে শুনশান নিরবতা। এ সময়ে অকারনে কেউ বাইরে বের হলেও তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে আবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কুষ্টিয়ায় সর্বাত্মক লকডাউন কার্যকর করতে জেলার সীমান্তবর্তী স্থানে চেকপোস্টে ডিউটি পালনের জন্য বাঁশ বেধে কড়া পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। কুষ্টিয়া – রাজবাড়ী মহাসড়কের খোকসা থানাধীন শিয়ালডাঙ্গী সীমান্তে চেকপোস্ট, কুষ্টিয়া- চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কের পাটিকাবাড়ী তাহাজ মোড়ে চেকপোস্ট, কুষ্টিয়া -ঝিনাইদহ মহাসড়কের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার সামনে চেকপোস্ট, মিরপুর থানাধীন হালসা ক্যাম্পের অধীনে নান্দিয়া- পাইকপাড়া ফিডার রোডে চেকপোস্ট, মিরপুর থানাধীন মালিহাদ ক্যাম্পের অধীনে কুটিয়াডাঙ্গা হাট বোয়ালিয়া সড়কে চেকপোস্ট, ভেড়ামারা থানাধীন লালনশাহ সেতুর টোল প্লাজায় চেকপোস্ট, কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সড়কের খলিশাকুন্ডি ব্রীজ চেকপোস্ট, দৌলতপুর সীমান্তে ধর্মদহ ব্রীজে চেকপোস্টে প্রতিদিন দুই শিফটে প্রতিটি চেকপোস্টে একজন এসআই, একজন এএসআই ও তিনজন কনস্টেবল সহ মোট পাঁচজন পুলিশ সদস্য চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করছে। একই সাথে কুষ্টিয়া জেলার সকল পৌর এলাকাগুলোর বিভিন্ন চেকপোস্টে পুলিশের কঠোর নজরদারী থাকায় আভ্যন্তরীণ সড়কে কোন প্রকার যানবাহন চলাচল করতে দেননি কুষ্টিয়া পুলিশ। অন্যদিকে পুলিশ সদস্যদের কার্যক্রম পরিদর্শনের জন্য প্রায় প্রতিটি চেকপোস্টে পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার মোঃ খাইরুল আলম।
কুষ্টিয়ায় লকডাউনের ১৭ তম দিনেও সরেজমিনে উপস্থিত থেকে কুষ্টিয়ায় লকডাউন প্রতিপালনে জনগণকে বাধ্য করতে মুক্ষ্য ভুমিকা পালন করেন মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ), মোঃ ফরহাদ হোসেন খাঁন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জেলা বিশেষ শাখা), মোঃ রাজিবুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর), মোঃ আতিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল, ওসি কুষ্টিয়া মডেল থানা, ওসি কুমারখালী, ওসি খোকসা, ওসি ভেড়ামারা,ওসি দৌলতপুর, ওসি ইবি, ওসি মিরপুর, ওসি ডিবি, টি আই (এডমিন) কুষ্টিয়াসহ জেলা পুলিশ কুষ্টিয়ার সকল র্যাংকের অফিসার ও ফোর্স।