ফুঁটিয়েছো হুঁল করছো মধু আহরন আমাতে সেতো ফুরাবার নয়: কুষ্টিয়ায় চলছে মধু আহরন
প্রতিবাদী কণ্ঠ ডেস্ক : গ্রামের মাঠ। চারপাশে এ যেন সেজেছে হলুদ শাড়িতে। গ্রাম বাংলার এমন ছবি এই মৌসুমে প্রতিবারের মতই। তবে এবার যেন একটু বেশিই। প্রকৃতি হলুদের দুয়ার উন্মুক্ত করে দিয়েছে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ধুবইলের মাঠ। খেতের পর খেত সরিষা আর সরিষা। সরিষা ফুলের অপূর্ব হলুদ শোভার চোখ জুড়ানো দৃশ্য পথচারীদের দারুণভাবে আকৃষ্ট করছে। দৃষ্টির সীমানাজুড়ে সর্ষে ফুলের হলুদ রঙে অপরূপ রূপে সেজেছে।
আর তাই শর্ষে ক্ষেতের মম গন্ধে মাতোয়ারা চারদিক। শুনা যাচ্ছে মৌমাছির ভো ভো শব্দ। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে বৈঞ্জানিক পদ্ধতিতে মধু আহরণও। অন্যদিকে হলদে সাজের সমাহার ইঙ্গিত করছে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনার দিকেও।
সরিষা খেতে বাক্সবন্দী মৌচাকের মাধ্যমে তুলে আনা হচ্ছে মানসম্মত মধু। এতে লাভবান হচ্ছেন এ অঞ্চলের কৃষক আর অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন মৌচাষীরাও। মাঠে এখন হলুদ ফুল ভরে গেছে। এসব মাঠে চলছে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছির আনাগোনা। এ সময়টা মৌমাছিরাও যেন ফুসরত নেই এতটুক। ওরা ফুলে ফুলে বসে মধু সঞ্চয় করেই চলেছে।
মিরপুর এলাকার মৌচাষী মামুন বলেন, সারাদিন মৌমাছি শর্ষে ফুলে পরাগায়ণ ঘটায় এবং মধু সংগ্রহ করে। এরা সাধারণত ৩ কিলোমিটার দূর থেকে মধু সংগ্রহ করতে পারে। এক সপ্তাহ পরেই প্রতিটি বাক্সে এসব চাক থেকে বিশেষ পদ্ধতিতে বের করা হচ্ছে দেড় থেকে দুই কেজি পর্যন্ত খাটি ও স্বাস্থ্যকর মধু। মাঠে বসেই এ মধু বিক্রি হচ্ছে ৪টাকা কেজি। পুরো মাস জুড়ে চলবে শর্ষে ক্ষেতে মধু আহরণ। মধু সংগ্রহের মাধ্যমে এ অঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন সম্ভব বলেও জানান তিনি।
কয়েকজন কৃষক জানান, সরিষা উঠার পর ওই জমিতে বোরো চাষ করা যাবে। একই জমিতে বছরে ৩টি ফসল ফলবে। যে কারণে কৃষকদের সরিষা চাষে আগ্রহ দিন দিন বেড়েই চলেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ জেলায় এবার সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলেও আশা করেন তারা। শেষ পর্যন্ত এ অবস্থা থাকলে বেশ লাভবান হব বলেও জানান তারা।
মিরপুর কৃষি উপজেলা কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানান,গত কয়েক বছর ধরে এ অঞ্চলে সরিষা চাষ বেড়েছে। এ বছর এই উপজেলায় ১৫১০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। আর এ থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২০০ টন। আবহাওয়া শেষ পর্যন্ত অনুকূলে থাকলে এবার সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলেও আশাবাদী তিনি।