রেদওয়ানুল হক সবুজ : কুষ্টিয়া শহরের জিলা স্কুলের সামনে মজমপুর এলাকার আইনজীবীর বাসা থেকে নার্সিং প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত জান্নাতুল ফেরদৌস তুলি (২২) কুষ্টিয়া নার্সিং ইন্সষ্টিটিউটের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। পরিবারের অভিযোগ আইনজীবী মাহমুদুল হাসান সুমনের তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন। মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) রাত পৌনে ৮টায় মজমপুর এলাকায় ওই আইনজীবীর ভাড়া বাসায় এই ঘটনা ঘটেছে। নিহত জান্নাতুল ফেরদৌস তুলি কুষ্টিয়া পৌরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ড মোলাতেঘরিয়া গ্রামের ওহিদুল ইসলামের কন্যা । অভিযুক্ত মাহমুদুল হাসান সুমন কুষ্টিয়া জর্জ কোর্টের আইনজীবী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৭ মাস থেকে আইনজীবী মাহমুদুল হাসান সুমন সঙ্গে তুলি প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই অবস্থায় গত ১৮ আগস্ট সুমন পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন। সুমনের বিয়ের বিষয়টি জানতে পেরে মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) বিকেল ৩টার সময় তুলি ওই আইনজীবীর বাসায় যান। পরে সেখান থেকে সন্ধ্যার পর রাত পৌনে ৮টায় তুলি মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ।
নিহত তুলির বড় বোন জান্নাতুল তাসনিমের অভিযোগ, ‘সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাসা থেকে কলেজের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে যায় তুলি। সেখানে ৩টা পর্যন্ত ক্লাস করে সেখান থেকেই তুলি ওই আইনজীবীর বাড়িতে যায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ওই আইনজীবী আমার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে তার বাসায় যেতে বলেন। আমরা পরিবারের লোকজন সুমনের বাসায় গিয়ে দেখি আমার বোন তুলির মরদেহ নিচতলার রাস্তার উপর একটি ভ্যানের উপর রাখা। আমার বোনকে আইনজীবী মাহমুদুল হাসান সুমন ঠান্ডা মাথায় শ্বাসরোধ করে হত্যা করে, গলায় রশি পেচিয়ে আত্মহত্যার কথা প্রচার করছে। আমার বোন যদি আত্মহত্যা করবে তাহলে পুলিশ না ডেকে সে লাশ ওরা নিজেরা কেনো বাইরে নিয়ে আসলো? আমরা এই হত্যার বিচার চাই। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করব।’
সরেজমিনে ঐ বাড়ির মালিকের সিসি ফুটেজে দেখা যায়, ‘ওই ভবনের ৩য় তলা থেকে সিঁড়ি বেয়ে মাহমুদুল হাসান সুমন ও তার একাধিক আইনজীবী তুলির নিথর মৃরদেহ চ্যাংদোলা করে নিচে নামিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়, কুষ্টিয়া একাধিক আইনজীবীদের সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও বারের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হাসুকেও উঠতে দেখা যায়। উক্ত ঘটনাস্থলে স্থানীয় কোন ব্যক্তির উপস্থিতি পাওয়া যায় নাই। এ বিষয়ে আইনজীবী মাহমুদুল হাসান সুমনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলে তা বন্ধ পাওয়ায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে শহরের মজমপুর এলাকা থেকে এক তরুনীর মরদেহ উদ্ধার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ। তবে ঠিক কি কারণে ওই তরুনীর মৃত্যু ঘটেছে তা এ মুহুর্তে সঠিক কিছু বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলেই জানা যাবে মৃত্যুর সঠিক কারণ। এ ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।