রেদোয়ানুল হক সবুজ : প্রায় ৪০ বছর ধরে কুষ্টিয়া সদরের মধুপুর নামক স্থানে মহাসড়ক দখল করে চলছে এই জেলার বৃহত্তম কলার হাট। কলার হাটটি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মধুপুরের কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক সংলগ্নে অবস্থিত। মাসের ৩০ দিনই বসে এই কলার হাট। কলার হাটটি এতই বৃহৎ যে, প্রায় আধা কি:মি: মহাসড়কটির মাঝ দিয়ে ডিভাইডারের দুই পাশে বেরিকেট দিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে হাট ইজারাদার।
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই হাটে প্রতিদিন এক থেকে দেড় কোটি টাকার কলা কেনা বেচা হয়। সরজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কের একপাশ বন্ধ করে রাস্তার উপর কলা গাদি করে রাখা হয়। সড়কের উপরেই দিনভর ট্রাক, ট্রলি, নসিমন, করিমন ও ভ্যানে কলা লোড ও আনলোড করছে ব্যবসায়ীরা। হাটের সামনেই একটি স্কুল রয়েছে তাদেরকে মহাসড়কের রাস্তা দিনে দু’বার পার হতে হয়। এই সকল কোমলমতি শিশুদেরকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হতে হয় প্রতিনিয়ত। অভিযোগ উঠেছে এই হাটের ফলে প্রতিনিয়ত ছোট বড় এক্সিডেন্ট লেগেই রয়েছে।
বছরের ১২ মাস ধরেই কলার আবাদ করে যাচ্ছে প্রন্তিক চাষীরা। সূর্য উদিত হওয়ার সাথে সাথেই এই হাটে সবরি, চাঁপা সবরি, জয়েন্ট গভর্ণর কলা, চিনি চম্পা কলাসহ বিভিন্ন জাতের কলা নিয়ে আসতে থাকে কুষ্টিয়াসহ ৫/৬ জেলার কৃষক ও ফরিয়া ব্যবসায়ীরা। দেশব্যাপী এই এলাকার কলার প্রচুর চাহিদা থাকায় প্রতিদিনই ঢাকা সহ সারা দেশে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ ট্রাক কলা সরবরাহ হচ্ছে কুষ্টিয়ার এই হাট থেকে। শুধুমাত্র কুষ্টিয়া এলাকার কলা চাষিই নয় পাশ^বর্তী জেলা ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, পাবনা, রাজবাড়ী সহ বিভিন্ন জেলা থেকে বিক্রির জন্য কলা নিয়ে আসে এই হাটে।
হাট ইজারাদার ক্যামেরার সামনে না এস বলেন, হাটের মোট জায়গা ১১ শতাংশ। ২ লক্ষ টাকা দিয়ে জায়গা লীজ নিয়ে হাট বর্ধিত করেছি। অল্প জায়গা। এদিকে কলা হয় প্রচুর। আমাদের চেষ্টার ট্রুটি নাই। তবে তিনি স্বীকার করে বলেন, পশ্চিমে কেনাল এর দিকে একটি রোড করে দিলে মহাসড়কে ট্রাক লোড আনলোড আর হবে না। এবার অল্প কয়েক ট্রাক বালি ফেলেছি।
আব্দালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলি হায়দার স্বপন বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, হ্যাঁ কলার হাটের জন্য রাস্তাটি ব্লক হয়ে যায়। আসলে আমি চেয়ারম্যান হিসেবে পদাধিকার বলে ইউনিয়নের সব হাটের সভাপতি। আসলে যারা হাট ইজারা দেয় ও যারা ইজারা নেয় তারাই এগুলো নিয়ন্ত্রণ করবে।
কুষ্টিয়া হাইওয়ে থানার ওসি বলেন, আমি কয়েকবার ওখানে গিয়েছি। ওদের নিষেধ করলে ওরা শোনে না। রাস্তা থেকে সব সরিয়ে দিয়ে চলে আসার পর আবার ওরা আবার রাস্তার উপরে বসে তিনি আরো বলেন, ইউএনও স্যারেরও কাজ রয়েছে উক্ত হাটে যেহেতু তারাই হাট ইজারা দিয়েছে। আসলে আমার একার পক্ষে এটা ঠেকানো সম্ভব না।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইউএনও বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নাই আপনার মাধ্যমে জানলাম এখন দেখা যাক কি করা যায়। হাটে তো একটা ডাক হয় সেই টাকা দিয়ে এতদিনও ট্রাক লোড আনলোড করার জায়গা কেন করা হয়নি এবং হাইওয়ে রোড কেন দখল করে করা হচ্ছে এটা আইনসিদ্ধ কিনা বিষয়টি আমি দেখছি।