রেদোয়ানুল হক সবুজ : কুষ্টিয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এক সময় দালালদের হাতে জিম্মি। মাত্র কয়েক মাসের প্রচেষ্টায় বর্তমানে পুরোটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে দালালদের দৌরাত্ম। পাশাপাশি বেড়েছে সাধারণ গ্রাহক সেবার মান। আর এই অসম্ভববে সম্ভবকে করেছে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের বর্তমান সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন। তিনি যোগদানের পর থেকে এ অফিসের চিত্র সম্পূর্ণটাই পাল্টে গেছে। পাসপোর্ট অফিসের মূল ফটক থেকে শুরু করে অফিসের সকল স্থানে লাগানো আছে একটি করে লিফলেট। এতে লেখা রয়েছে, অফিসের কেউ যদি আপনার নিকট অর্থ বা অবৈধ কিছু দাবি করে তবে সাথে সাথে সহকারী পরিচালককে অবহিত করুন। নিচে লেখা রয়েছে সহকারী পরিচালকের রুম নম্বর ও মোবাইল নম্বর।
সরেজমিনে কুষ্টিয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে কথা হয় পাসপোর্ট করতে আসা সাধারণ গ্রাহক ও অফিস কর্মচারীদের সাথে। এ সময় গ্রাহকেরা পাসপোর্ট অফিসের আমুল পরিবর্তনের জন্য সন্তোষ প্রকাশ করেন। সহকারী পরিচালকের রুমের দরজায় লেখা রয়েছে, সহকারী পরিচালকের কক্ষে প্রবেশের কোনো অনুমতির প্রয়োজন নেই। এই অফিস আপনাদের। গ্রাহকরা আরো বলেন, পূর্বে যে সকল কর্মকর্তরা ছিলেন তাদের রূপ ছিল ভিন্ন ঐ সকল কর্মকর্তারা নিজেরাই দালাল পুষতেন অফিসের ভিতর। তাদের সাথে কথা বলা যেত না কিন্তু বর্তমান সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন ঠিক তাদের উল্টো। তিনি একজন মিষ্টভাসী সদালপি ও জনবান্ধব একজন কর্মকর্তা। এদিকে অফিসের নোটিশ বোর্ডে পাসপোর্টের ফরম পূরণের নমুনা কপি ও নিয়মাবলী লাগানো হয়েছে। এতে পাসপোর্ট করতে করণীয় সব ধরনের তথ্য রয়েছে। ফরম পূরণের নিয়মাবলী, যে সমস্ত ব্যক্তি সত্যায়িত করতে পারবেন তাদের পদাবলি, কোন কোন ব্যাংকে কত টাকা জমা দেবেন সেই তথ্যও দেয়া হয়েছে। মোট কথা সার্বিক তথ্য দেওয়া আছে।
সার্বিক বিষয়ে কুষ্টিয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, যে কোনো পাসপোর্ট প্রত্যাশী সাধারন মানুষ এসে সঠিকভাবে যেন তাদের পাসপোর্ট করিয়ে নিতে পারে সেজন্য আমার রুম সবার জন্য উন্মুক্ত রেখেছি। এছাড়াও কেউ আমার স্টাফদের দ্বারা হয়রানির শিকার না হওয়ার জন্য অফিসের মূল ফটক থেকে শুরু করে সব জায়গায় সতর্কতামূলক লিফলেট লাগিয়েছি। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ করে গ্রাহকরা সহজেই তাদের আবেদনপত্র জমা দিতে পারছে। যার ফলে গ্রাহকরা হয়রানি থেকে রেহাই পাচ্ছে। বর্তমানে কুষ্টিয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এখন দালালমুক্ত। পাসপোর্ট করতে দালালের শরণাপন্ন না হতে তিনি সবার প্রতি অনুরোধ জানান।