কামরুজ্জামান রিপন : কুষ্টিয়া শহরের র্যাব গলিতে নানান অনিয়ম মধ্যেই পরিচালিত হচ্ছে শাহীন ক্যাডেট স্কুল নামের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গত ০৪ অগাস্ট বৃহস্পতিবার ধর্মের শিক্ষক আনোয়ার হোসেন কর্তৃক রিজভী নামের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে । এই ঘটনায় ভয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যরা ।
ভুক্তভোগী ঐ শিক্ষার্থীর মায়ের সাথে কথা বললে তিনি সত্যতা স্বীকার করে জানান, তার আরো সন্তান এই বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে তাই তিনি এই বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিতে পারছেন না । কারণ হিসাবে তিনি জানান, পরে যদি স্কুল কর্তৃপক্ষ তার সন্তানদের বিদ্যালয় থেকে বের করে দেন তাহলে বছরের মাঝামঝি সময়ে তাকে বিপদে পড়তে হবে ।
ছাত্র মারধরের বিষয়ে শাহীন ক্যাডেট স্কুলের ধর্মের শিক্ষক আনোয়ারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন আমার ভূল হয়ে গেছে এবং আমি ছাত্রের অভিভাবকের সাথে কথা বলে মিমাংশা করে নিয়েছি ।
এই বিষয়ে স্কুলের দুই ইনচার্জের কাছে জানতে চাইলে ইনচার্জ মিলন জানান, আমি ছুটিতে ছিলাম । আমি স্কুলে আসার পর বিষয়টি শুনেছি এবং ছাত্রে অভিবাবকের সাথে ইতিমধ্যে মিমাংশা করা হয়েছে বলে জানি এবং অপর ইনচার্জ মোঃ উজ্জ্বল স্কুলে না থাকায ও মোবাইল কল রিসিভ না কারায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মোঃ উজ্জ্বল এবং মিলন সরকার নামের দুই শিক্ষক দায়িত্বে থাকলেও অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্পোরেট অফিস ঢাকার উত্তরায় । সেখান থেকে স্কুলের যাবতীয় এ্যাডমিন্সট্রেশনের দেখভাল করা হলেও শিক্ষার্থী প্রহরের বিষয়টি তারা কিছুই জানেন না ।
সরেজমিনে দেখা যায়, চারতলা ভবনে প্রায় ৫৫০ জন শিক্ষার্থী এবং ৩৬ জন শিক্ষক নিয়ে প্লে গ্রুপ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত স্কুলটি তাদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত করে আসছে দীর্ঘদিন । কিন্তু স্কুলটিতে নেই কোন বিনোদনের স্থান । কম জায়গার মধ্যেই গাদাগাদি করে চলছে শিক্ষা কর্যক্রম । পর্যাপ্ত খোলা জায়গা না থাকার ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি সহ নানাবিধ সমস্যা নিয়েই ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীরা ।
শাহীন ক্যাডেট স্কুল কর্তৃপক্ষ ফায়ার সার্ভিস থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়েছে মর্মে জানালেও তারা এই সম্পর্কিত কাগজ পত্র দেখাতে ব্যার্থ হয়। খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, ৫৫০ জন শিক্ষার্থী থাকলেও তাদের নিরাপত্তার জন্য স্কুলে নেই কোন অগ্নির্নিবাপন ব্যবস্থা । ছাত্র ছাত্রীদের খেলার জন্য নেই কোন উন্মক্ত স্থান ।
ফায়ার সার্ভিস থেকে অনুমোদন বিষয়ে জানতে কুষ্টিয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স দপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ জানে আলম জানান, আমি নতুন এসেছি । এই বিষয়ে এখন কিছু বলতে পারছি না । তবে আমার মনে হয় শাহীন ক্যাডেট স্কুল আমাদের কাছ থেকে কোন অনুমোদ নেই নাই ।
এই বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা শিক্ষা অফিসার রমজান আলী আকন্দ এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ছাত্র মারধরের বিষয় আমি কিছু জানি না । তবে এই বিষয়ে যদি কেউ অভিযোগ দেয় তাহলে আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো ।