রেদোয়ানুল হক সবুজ : প্রতি বছরের ন্যায় আলাউদ্দিন আহমেদ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শুক্রবার ২৯ মার্চ (১৮ রমজানে) কুষ্টিয়ার কুমারখালীর আলাউদ্দিন নগরে আলাউদ্দিন আহমেদ শিক্ষাপল্লী পার্কের অডিটোরিয়ামে এ ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন আহমেদের মাতার ২৩তম মৃত্যু বার্ষিক উপলক্ষে সকালে হাফেজে কোরআনদের নিয়ে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও প্রতি বছর বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন আহমেদ বিভিন্ন আয়োজন করে থাকেন। তারই অংশ হিসেবে প্রতি বছর রমজানে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
১৯৯৫ সাল থেকে আলাউদ্দিন আহমেদ প্রতি রমজানে তার নিজ বাসভবনে গ্রামবাসীদের ইফতার করান। গত শুক্রবারের ইফতারীর আয়োজনটা ছিল অনেকটাই ভিন্ন কারন এতবড় ইফতারের আয়োজন করায় গ্রামবাসী থেকে শুরু করে আশে পাশের মেহমানরা তাকে সাধুবাদ জানান। তারা বলেন, শুধু অর্থ থাকলেই হবেনা। বড় মন থাকতে হবে। আলাউদ্দিন আহমেদ বড় মনের মানুষ। তাইতো তিনি প্রতি বছওে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান করেন তার নিজ খরচে। তিনি দেশর স্বনামধন্য শিল্প প্রতিষ্ঠান হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল লি: ও একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক।
আলাউদ্দিন আহমেদের জীবনদর্শনই হচ্ছে মানবপ্রীতি, তিনি মানুষের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করে দিয়ে হয়ে উঠেছে স্বপ্নের চেয়েও অনেক বড় একজন সমাজসেবক। তাঁর কর্মের পরিধি ব্যাপক, জ্ঞান ভান্ডার অফুরন্ত, এক কথায় সর্বক্ষেত্রে তিনি সফল ও সার্থক একজন কর্মবীর মানুষ। সত্য, ভালো ও সুন্দর এই তিনটির উপর নৈতিকতা দাঁড়িয়ে থাকে। সদা সত্য বলা, ভালো কাজের সাথে থাকা এবং সুন্দরের প্রতি আগ্রহ বা সমর্থন থাকা এই সবগুলো গুণই তাঁর মধ্যে বিরাজ করছে। তিনি একজন আপাদ মস্তক ইসলামী ভাবধারার ধর্মভীরু মানুষ। আলাউদ্দিন আহমেদ স্বচ্ছ চিন্তা-চেতনার মানুষ, পরিবর্তিত সমাজ ব্যবস্থায় তিনি মানবীয় গুণ সম্পন্ন একটি উজ্জ্বল আদর্শের প্রতীক। বলতে গেলে তিনি আমাদের দূষিত সমাজে একজন পরিশুদ্ধতায় খাঁটি অন্ত:প্রাণ সৎ নির্লোভ ব্যক্তিত্ব। ইসলামের দিক নির্দেশনাকে আদর্শ জেনে সমাজনীতি ও অর্থনীতির মাধ্যমে দেশ-জাতি-মাটি-মানুষের কল্যাণে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে সাধারণ মানুষের ভালো-মন্দ, চাওয়া-পাওয়া, আনন্দ-বেদনার সাথে খুব কাছ থেকে সম্পৃক্ত থাকেন।
আলাউদ্দিন আহমেদ এখন একটি নাম নয়, তিনি নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান। আলাউদ্দিন আহমেদ এখন আলাউদ্দিন নগরের সন্তান নয়, তিনি সমগ্র বাংলাদেশের এক গৌরবান্বিত সন্তান। এক সময়ের অন্ধকারাচ্ছন্ন গ্রামটিতে সাধারন মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রযুক্তিগত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত করে যে অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধন করেছেন তা তারই নিঃস্বার্থ অবদান। তাঁর এ যুগান্তকারী সংস্কারমুলক কর্মকান্ডেই আজ তিনি এই গ্রামের রূপকার। ১৯৯৬ সালের ২৭ জানুয়ারী, চকরঘুয়া গ্রামের পক্ষ থেকে কুষ্টিয়ার এক কৃতি সন্তান বিশিষ্ট সমাজসেবক ও প্রেকৌশলী মরহুম কামরুল ইসলাম সিদ্দীকীকে গন সম্মর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে আলাউদ্দিন আহমেদের নামানুসারে “আলাউদ্দিন নগর” নামকরনের স্বীকৃতি পেয়েছিল। সেই থেকে তিনি আলাউদ্দিন নগরের রূপকার হয়ে প্রতিষ্ঠিত করেন আলাউদ্দিন নগর শিক্ষাপল্লী।
তিনি একজন অতি ভদ্র, নম্র, মার্জিত, বিনয়ী ও সফলতায় মোড়ানো জনপ্রিয় একজন সমাজসেবক। মহাসাগরের মত বিশাল হৃদয়ের অধিকারী, যাঁর কোন তুলনা হয়না। ধর্মীয় শাস্ত্র মতে, এক দানা বিলাইলে হাজার দানা মেলে। কথাটা যতার্থই প্রমানীত, আলাউদ্দিন আহমেদ তাঁর একক উপার্জিত অর্থ দু’হাতে বিলিয়ে দিচ্ছে, কই তাঁরতো কোন অর্থের কমতি হয়নি, বরং বেড়েই চলেছে।
তারই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার সকালে আলাউদ্দিন নগরের নিজ বাসভবনে তার মাতার মৃত্যু দিবসে সকালে ৭ টা থেকে ১২টা পর্যন্ত চারটি মাদ্রাসার প্রায় ২শতাধিক ছোট ছোট কোরানের পাখিরা এসে পবিত্র কোরআন তেলোয়াত, কালেমা পাঠ শেশে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় প্রায় ১ হাজার গ্রামবাসীদেরকে ইফতার করার তিনি। তার এই কর্মকান্ড দেখে একজন বলেন, সমাজের মানুষের মঙ্গলার্থে এই মহান ত্যাগী মানুষটি যে সকল জনহিতকর কর্মকান্ড করে চলেছেন তা সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় হওয়া উচিত ছিল। অথচ আলাউদ্দিন আহমেদ একক প্রচেষ্টায় সমাজের উন্নতিকল্পে তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। আমি হাজী মুহম্মদ মহসীনকে দেখি নাই, দেখেছি বর্তমান সময়ের হাজী মুহম্মদ মহসিনকে, তিনি হল আজকের বর্তমান সময়ের সমাজসেবক দানবীর আলাউদ্দিন আহমেদ। সমাজকর্মের সার্বিক বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের সমাজকল্যান সেক্টরে তাঁর নাম স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ করে রাখা অবশ্যই প্রয়োজন। আলাউদ্দিন আহমেদের জীবনদর্শনই হচ্ছে মানবপ্রীতি, মানুষের কল্যানে নিবেদিত এক প্রাণ। এক কথায় বলা যায়, তিনি একজন অসাম্প্রদায়িক দার্শনীক সমাজসেবক ও আলোকিত মানুষ।