যুক্তরাষ্ট্রে মঙ্গলবার ভোট গ্রহণ শুরুর আগেই রেকর্ড সংখ্যক ভোটার আগাম ভোট দিয়ে ফেলায় ধারণা করা হচ্ছে নির্বাচনের দিনে এ বছর সশরীরে ভোট দানের হার কম হবে। তারপরও নির্বাচনের দিনে হুমকি হয়ে ওঠার মতো বেশ কিছু ঝুঁকি থেকে গেছে। ভোটারদের লম্বা লাইন, ভোটিং মেশিন বিকল হয়ে পড়ার পাশাপাশি করোনাভাইরাসের মহামারি ভোটার ও নির্বাচন কর্মীদের ঝুঁকি বাড়িয়েছে। এছাড়া নির্বাচনে হস্তক্ষেপ এ সংঘাতের আশঙ্কায় নির্বাচন কর্মকর্তা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শঙ্কা বাড়িয়েছে। জনগণের মধ্যে বাড়িয়েছে উৎকণ্ঠা।
এবছর প্রায় দশ কোটি আমেরিকান ভোটার ডাকযোগে আগাম ভোট দিয়েছেন, যা দেশটির ইতিহাসে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে ভিড় এড়াতেই মূলত ডাকযোগে ভোটের সংখ্যা বেড়েছে। রেকর্ড সংখ্যক ভোটার আগাম ভোট দিলেও ভোটাধিকার গ্রুপগুলো বলছে, নির্বাচনের দিন কর্মকর্তারা ভোট কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার পরও ভোটারদের লম্বা লাইন তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, করোনাভাইরাসের মহামারি এবং বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে এই বছর ভোটদান প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনায় দ্বিধা তৈরি হতে পারে।
বুথে পড়া ভোটের হিসাবে জয় পরাজয় নির্ধারিত নাও হতে পারে। কিন্তু ডাকযোগে যারা ভোট দিয়েছেন, তাদের ব্যাটল পেপার পৌঁছাতে এবং গণনা শেষ হতে মঙ্গলবার পেরিয়ে আরও কয়েকদিন সময় লেগে যেতে পারে।
এছাড়া নির্বাচনের দিন হাজার হাজার দলীয় সমর্থককে ভোটকেন্দ্রগুলোতে জড়ো করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচার শিবির যেসব পদক্ষেপ জোরালো করেছে তার জেরেই এই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এছাড়া রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটিও ভোটদানে কোনও অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করতে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। একই ধরণের পাল্টা পদক্ষেপ ডেমোক্র্যাট শিবিরও নেবে বলে ধারণা রয়েছে।
ডাকযোগে রেকর্ড সংখ্যায় ভোট, ইলেকটরদের মধ্যে বেশিমাত্রায় মেরুকরণ কিংবা সুপ্রিম কোর্টে বিচারকদের প্রস্তুতির যে আভাস যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলো দিচ্ছে, তাতে নতুন প্রেসিডেন্ট চূড়ান্ত হওয়ার লড়াই শেষ পর্যন্ত আদালতে গড়াতে পারে। যে কোনও একটি ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড’ অঙ্গরাজ্যের ফলাফল সমান-সমান বা চুল পরিমাণ পার্থক্য হলেও উভয় পক্ষ আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে। রিপাবলিকান প্রার্থী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শুরু থেকেই বলে আসছেন, নির্বাচনে পরাজিত হলে তিনি রায় মেনে নাও নিতে পারেন। প্রয়োজনে যেতে পারেন উচ্চ আদালতে। এজন্য প্রস্তুতিও নিয়েছেন।