“তথ্য আামার অধিকার জানতে হবে সবার” শ্লোগানে এবং “তথ্য আামার অধিকার জানা আছে কি সবার” প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে কুষ্টিয়ায় ডিস্ট্রিক্ট পলিসি ফোরাম (ডিপিএফ) এর উদ্যোগে এবং প্লাটফর্মস ফর ডায়লগ (পিফরডি) প্রকল্পের সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকাল ০৩টা ৩০ মিনিটে ডিপিএফ কুষ্টিয়ার সভাপতি মোছা: মাহবুবা বেগম এর সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন উপ পরিচালক স্থানীয় সরকার, মৃনাল কান্তিদে, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোছা: শারমিন আখতার সহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের দপ্তর প্রধানগণ। দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে জেলার শীর্ষস্থানীয় বিভিন্ন শ্রেনী প্রেশার ব্যক্তিবর্গের অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে আয়োজনটি প্রানবন্তও সমৃদ্ধ হয়ে উঠে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির উদ্বোধনী বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই ভার্চুয়াল সভায় ডিপিএফ কমিটির সদস্য রত্না বাগচির সঞ্চালনায় এবং ডিপিএফ কুষ্টিয়ার সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামানের শুভেচ্ছা বক্তব্যের পর দিবসটি মূল প্রতিপাদ্য ও তাৎপর্য তুলে ধরে ধারণাপত্র পাঠ করেন কমিটির সহ-সভাপতি সাংবাদিক হাসান আলী। মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে স্কুল কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, বিভিন্ন সরকারি বে-সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, সামাজিক সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সরব অংশগ্রহণের মাধ্যমে তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নের বাধা বা চ্যালেঞ্জ এবং তার উত্তোরণ ও সমাধানের সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এসময় বক্তারা বলেন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের অভিযাত্রায় টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট অর্জনে কাউকে পিছনে ফেলে নয় সকলকে সাথে নিয়ে পথচলায় জনগণের অংশীদারিত্ব নিশ্চিতে অবাধ তথ্য প্রবাহ ব্যতীত বিকল্প কোন পথ নেই। সেই লক্ষ্যে ২৯ মাচর্, ২০০৯ তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ পাশ হয়। ৫ এপ্রিল, ২০০৯ এই আইনটি মহামান্য রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করে এবং ৬ এপ্রিল, ২০০৯ আইনটি বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশের সংবিধানে চিন্তা, বিবেক ও বাক-স্বাধীনতা নাগরিকগণের মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত। সেকারণে রাষ্ট্র কর্তৃক জনগণের কল্যাণে গৃহীত যে কোন নীতি, কর্মসূচী ও কর্মকান্ডের বিষয়ে জনগণের স্পষ্ট ধারণা থাকা আবশ্যক। নাগরিক চিন্তার ক্ষেত্র প্রসারণে অভিমত ব্যক্ত করার স্বাধীনতার জন্য তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ একটি অন্যতম রক্ষাকবচ। তথ্য অধিকার আইনের দর্শনকে বাস্তবে রূপদান করতে এর প্রায়োগিক ক্ষেত্রটিকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলা আবশ্যক। অন্যথায় এই আইনের উপযোগিতা বাংলাদেশের নাগরিক জীবনে যথার্থভাবে অনুভূত হবেনা। চাহিদা অনুযায়ী অবাধ তথ্য প্রবাহের মাধ্যমে নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠাই হবে গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণের দৃষ্টিভঙ্গির অন্যতম প্রধান নির্ধারক। সরকারী, বে-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও এনজিওদের কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে দুর্নীতি হ্রাস করে সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নের অব্যহত ধারায় জনসম্পৃক্ততায় আগ্রহ সৃষ্টি করা। অবাধ তথ্য প্রবাহেই জনগণের তথ্যের অধিকার নিশ্চিতকরণ সম্ভব। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী জনগণ প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক এবং চিন্তা, বিবেক ও বাক-স্বাধীনতা নাগরিকের অন্যতম মৌলিক অধিকার। তথ্য অধিকার আইন জনগণের এই মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দিয়ে তথ্য অধিকার বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতায়নের পথ সুগম করেছে।