উজানগ্রাম ইউপির একাধিক মুক্তিযোদ্ধাদের বক্তব্যের ধারাবাহিক- ১ম পর্ব
————————————-
- কুষ্টিয়া সদর উপজেলা ১০ নং উজানগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চারজন প্রার্থীকে মাঠে দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা যাচ্ছে। উক্ত প্রার্থীদের মধ্যে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের বিদ্রোহী প্রার্থী প্রফেসর আব্দুল মজিদের স্ত্রী রেহেনা মজিদ, বর্তমান চেয়ারম্যান সাবুবিন ইসলাম, আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও বর্ষিয়ান নেতা সানোয়ার হোসেন মোল্লা ও রাজাকারপুত্র আবু বক্কর সিদ্দিকী উক্ত চারজনই নৌকার প্রার্থী হতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
উজানগ্রাম ইউনিয়ন ঘুরে নির্বাচনী হাল হকিকত সম্পর্কে যেটা জানা গেছে, সেটি হল আবু বক্কর সিদ্দিকী তিনি উজানগ্রাম ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক। তার নামে কুষ্টিয়া বিশেষ ট্রাইবুনাল আদালতে নাশকতার মামলা রয়েছে যার নং ১৩/২০২১, আগামী ২৩/০১/২০২২ তারিখে শুনানি রয়েছে। আরেকটি রয়েছে মার্ডার মামলা যার নং ১৫৩/২০২০ গত ২১/১০/২০২১ তারিখে হাজিরা ডেট ছিল।
নৌকা প্রত্যাশী বিত্তিপাড়া গ্রামের নজরুল রাজাকারের ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিকী সম্পর্কে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেত্রী ও গজনবীপুর গ্রামের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনের স্ত্রী রানী মুঠো ফোনে বলেন, নজরুল রাজাকারের ছেলে বক্করকে যদি নৌকা প্রতীক দেওয়া হয় তাহলে আমাদেরকে বিষ খেয়ে মরতে হবে। নতুবা আমরা আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করবো। তার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার বাবা ছিলেন একজন রাজাকার তাকে রাজাকার বললে ভুল হবে তিনি একজন মুজাহিদ। আজ তার কারণেই বিত্তিপাড়ায় বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে। তার পিতা নজরুল উক্ত এলাকার অনেককে হত্যা করেছে মুজাহিদ ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে অনেক মা-বোনের ইজ্জত ছিনিয়ে নিয়েছে। আজ তারই সন্তান নৌকা প্রতীক পাওয়ার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু রাজাকারের সন্তান রাজাকারই রয়ে গেছে। ২০০৪ সালে দল পরিবর্তন করে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন তারপর থেকেই আমাদের উপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তার চলাফেরা রাজাকারের মতোই।
তিনি আরো বলেন, তার পিতার ৩/৪টি বউ ছিল তারও রয়েছে ২/৩ বউ। গাভী সহ বিয়ে করেছেন তিনি। তার তিন সন্তানকে দিয়ে বিত্তিপাড়া বাজারে রাত-দিন ২৪ ঘন্টা ইয়াবার ব্যবসা করে এলাকা নষ্ট করে ফেলেছে। কুষ্টিয়া সদর আসনের এমপি মহোদয়ের বরাদ্দ এনে লোকজনকে দেয় এবং হুমকি-ধামকি দিতে থাকে। আমাদেরকে যদি ভোট না দিস তাহলে তোদেরকে ঘরে থাকতে দিবো না। আমাদের এলাকাতে সে যে কতটি মার্ডার করেছে তার কোন হিসেব নেই বর্তমানে একটি মার্ডার মামলায় আসামি হয়ে আছেন, অন্যদিকে নাশকতার মামলা ও আছে তাঁর নামে। তিনি এটাও বলেন এই বক্কর রাজাকার সেজে আমার পরিবারকে ধ্বংস করে দিয়েছে তবু আমি দলের হাল ছাড়েনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে পড়ে আছি।এছাড়াও তিনি বলেন তার কোন চালচুলো নেই অথচ চলেন রাজার হালে সাধারণ জনগণের অর্থ লুটপাট করে রাজাকারি কায়দায় চলছেন তিনি। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ ও আছে।
ইতিপূর্বে আবু বকর সিদ্দিকী মাননীয় এমপি মহোদয় মাহবুবুল আলম হানিফ ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা কে নিয়ে কটুক্তি করেছেন। আমরা প্রকৃত আওয়ামী যোদ্ধারা কখনোই চরিত্রহীন লম্পট প্রতারক ও নিকৃষ্টতম ব্যক্তিকে ইউনিয়ন পরিষদের দেখতে চাই না। তার পরিবর্তে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যেকোনো ন্যাংড়া, কানা, বোবা কে দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দিলে আমরা খুশি হব।
সর্বশেষে তিনি আরেকটি কথা বলেন যে আমি কখনো মিথ্যা বলি না তার সম্পর্কে যা বলেছি সবই সত্য তা এলাকাবাসী সকলেই জানেন। হ্যাঁ আমি মিথ্যে কথা বলি, কখন বলি একটি মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য মিথ্যা বলি, এটাতে যদি আমার পাপ হয় তাহলে হবে। ইতিপূর্বে ২/৩ বার আবু বকর সিদ্দিকী মার্ডার করতে গেলে আমি এমপি মহোদয় কে সঙ্গে সঙ্গে ফোন দিয়ে জানিয়ে সেটাকে বন্ধ করেছি এটাও যদি আমার পাপ হয় তাহলে হবে।
সর্বশেষ তিনি বলেন, উজানগ্রাম ইউনিয়ন নির্বাচনে একজন প্রকৃত আওয়ামী লীগের যোগ্য প্রার্থীকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হোক যাতে ইউনিয়নটি একটি মডেলে রূপান্তরিত হবে। কিন্তু রাজাকারকে দিলে রক্তের বন্যায় ভাসবে বিত্তিপাড়া, উজানগ্রাম সহ আশপাশের গ্রামগুলোতে, নতুন করে আরেকটি বধ্যভূমি রচিত হবে বিত্তি পাড়াতে