রেদোয়ানুল হক সবুজ :
কুষ্টিয়ায় ভুট্টার বাম্বার ফলন হলেও সরকারীভাবে সহযোগীতা না পাওয়ায় চাষিরা হতাশ হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। কৃষি অফিসের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ভুট্টার আবাদে বেশী ফলন হয়েছে। তবে চলতি বছর ভুট্টার দাম কম হওয়ায় চাষীরা লোকসানের মুখে পড়েছে। বর্তমানে কুষ্টিয়ার মাঠে ভুট্টাকাটার মহাউৎসব চলছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে ভুট্টাকাটার পর ভুট্টা ছাড়ানো কাজে চাষীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে খরচের চেয়ে ভুট্টার দাম গত বছরের চেয়ে কম হওয়ায় চাষিরা খুশি হতে পারছে না। সার, পানি, কীটনাশক ও ডিজেলে যত টাকা খরচ হয়েছে ভুট্টা বিক্রি করে তেমন লাভ হচ্ছে না বলে অনেক চাষী ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়া জেলায় মোট আবাদযোগ্য জমি রয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে চলতি মৌসুমে ভুট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৯ হাজার ৯১৬ হেক্টর। তবে আবাদ হয়েছে ১১ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে। অনুকূল আবহাওয়ায় সুষম সার, সেচ ব্যবস্থা ও শষ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়ায় ফলন বেশী হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল ভুট্টা বিঘা প্রতি ৩০ মণ ফলন হয়েছে। ভুট্টা চাষীরা এবার ভুট্টার দাম গত বছরের চেয়ে কম পাওয়ায় ভুট্টা চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে।
কুষ্টিয়া সদরের বালিয়াপাড়া গ্রামের ভুট্টা চাষি আনিচুর রহমান বলেন, চলতি বছর ভুট্টা ভালো হয়েছে। উন্নত মানের বীজ বপন করায় ভালো ফলন পেয়েছি। তবে ভুট্টার দাম হঠাৎ করে পড়ে যাওয়ায় লাভ হবে না। প্রথমে প্রায় দেড় হাজার টাকা মণ দরে ভুট্টা বিক্রি হয়েছে। তবে তা বর্তমানে কমে ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টাকিমারা গ্রামের চাষি হাসান আলী বলেন, জেলার অধিকাংশ চাষি পরের জমি বর্গা নিয়ে ভুট্টা চাষ করলেও তারা এবার ভুট্টা আবাদ করে লাভবান হতে পারছেনা। বিঘা প্রতি যে ফলন হয়েছে তা বিক্রি করে জমির মালিককে অর্ধেক এবং সার, কীটনাশক, পানি ও শ্রমের দাম দিতে যেয়ে বরগা চাষীদের কিছুই থাকছেনা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার উপপরিচালক ড. হায়াৎ মাহমুদ বলেন, কুষ্টিয়া জেলার আবাদযোগ্য জমির ৯০ ভাগ জমিতে এবার বোরো ধান চাষের পাশাপাশি ভুট্টার আবাদ কিছুটা বেড়েছে। যে পরিমাণ জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়েছে তাতে করে বাম্পার ফলন হয়েছে। ভুট্টার উচ্চ ফলনশীল জাত কৃষক পর্যায় পৌছে যাওয়ায় এবং সুষম সার ব্যবহার করায় ফলন ভালো পেলেও দাম কিছুটা কম পাচ্ছে চাষীরা। তিনি বলেন, মাঠ পর্যায় কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা চাষীদেরকে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেয়ায় ভুট্টার আবাদ যেমন বেড়েছে তেমনি ফলনও পেয়েছে ভালো।