রেদওয়ানুল হক সবুজ : কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর ইউনিয়নের ৩৫ নং স্বর্গপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাবেক সভাপতি দুর্নীতিগ্রস্তের দায় স্কুল থেকে বিতাড়িত করার পর ছলে বলে কৌশলে নতুন করে ঐ স্কুলটি দখলে নেয়ার পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। এই স্কুলে দুর্নীতিগ্রস্ত সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান রতন এর আত্মীয় কে সভাপতির প্রস্তাব করায় এলাকায় চরম অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। স্বর্গপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে কমিটি নিয়ে চলছে নানা চক্রান্ত। ইতিপূর্বে সাবেক সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষকের সমন্বয়ে স্কুলের সম্পত্তির আয়কৃত অর্থ দিয়ে স্কুলের মান উন্নয়ন না করে ব্যক্তিগত কাজে অর্থের ব্যবহার করে স্কুলটা ধ্বংসের দিকে নিয়ে গিয়েছিল তারা। তারই প্রেক্ষিতে স্কুল কমিটির সদস্য ও এলাকাবাসী তৎপরতায় অনলাইন পত্রিকায় ও ইলেকট্রনিক্স প্রিন্ট মিডিয়া এবং পত্র পত্রিকায় প্রচারের মাধ্যমে এবং বিভিন্ন মহলে অভিযোগ দিয়ে সেই কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। সে যে দুর্নীতি করেছে তা জেলা শিক্ষা অফিসার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে। তদন্তে তাদের দুর্নীতির বিষয়টি প্রমাণিত হয়। এ বিষয়টি জানাজানির পর তাকে কমিটি থেকে বাতিল করা হয় । সেই সাথে প্রধান শিক্ষককেও স্কুল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
বর্তমানে দুর্নীতিগ্রস্ত সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান রতনের আত্মীয় কে সভাপতির প্রস্তাব করায় এলাকায় চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে ওলিল ও ফরিদ এর অপকর্মে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। ফরিদের সকল অপকর্মের সহযোগী ওলিল বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী । এ বিষয়ে এলাকাবাসী বলেন এই স্কুলটি ইতিপূর্বে তাদের গুষ্টির দখলে থাকায় স্কুলে তো কোন উন্নতি হয় নাই বরং স্কুলের অর্থ দিয়ে তারা তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করেছে। সাবেক সভাপতির ভাই ফরিদ ও সহযোগী ওলিল এরা বংশ-পরম্পরমা আত্মীয়-স্বজন মিলে স্কুলটাকে জরাজীর্ণ এবং সর্বস্বান্ত করছে এবং স্কুলের টাকা লুটেপুটে খাচ্ছে। খোঁজ নিলে দেখবেন স্কুলটাকে ২০ থেকে ৩০ বছর এরাই পরিচালিত করছে নিজস্ব আত্মীয় স্বজন দ্বারা। কিন্তু স্কুলের কোন উন্নয়ন হয়নি । আবারও যদি তারা সভাপতি হয় তাহলে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে সেই সাথে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে বলে মন্তব্য করেন।সভাপতি নির্ণয়ের ক্ষেত্রে এই স্কুলে একটি নির্বাচন দিয়ে সভাপতি নির্ধারণ করলে সব থেকে ভালো হয় । কোন পকেট কমিটি না দিয়ে নির্বাচন দেয়া উচিত। পকেট কমিটি দিলেই এলাকায় সংঘর্ষ হতে পারে।
তবে আমরা আশা করব কমিটি দেওয়ার বিষয়ে যারা সিদ্ধান্ত নিবেন তারা বিষয়টি ভালোভাবে খোঁজখবর নিয়ে কমিটি অনুমোদন দিলে ভালো হবে। তবে বর্তমানে যাকে প্রস্তাব করা হয়েছে মনিরুল ইসলাম, তিনি পার্শ্ববর্তী একটা স্কুলের শিক্ষকতা করেন। তার বাবা কোরবান মুন্সি বিএনপি’র সাবেক ৩ নং ওয়ার্ডের সভাপতি। তার রাজনীতি জামাত-বিএনপি কেন্দ্রিক এমনটি আমরা জানি। আমাদের দাবি এই স্কুলে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সভাপতি নির্বাচন করা হোক।
স্কুলটি বর্তমান এ্যাড হক কমিটির মধ্য দিয়ে চলছে । এ্যাডহক কমিটি হওয়ার পরে স্কুলে যাতে পূর্ণাঙ্গ কমিটির ক্ষেত্রে ও স্কুলের সম্পত্তি দ্বারা দুর্নীতি না করা হয় এ মর্মে এই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ সাজেদুল ইসলাম মধু ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান কে আইনি নোটিশ পাঠান রহমান সোহানুর নামে ওই স্কুলের এক জমি দাতা। কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার সময় যাতে তাদেরকে অবগত করা হয় অথচ বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ সাজেদুল ইসলাম মধু তিনি গোপনে তাদেরকে কিছুই না জানিয়ে সাবেক সভাপতির আপন ভাই ফরিদ ও ওলিল এর ইশারায় ও তার ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য এবং মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে পকেট কমিটি করার এক গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সোহানুর রহমান সোহান ও তার ভাই বুলু বিশ্বাস তিনি বলেন তারা অর্থের বিনিময়ে আমাদের কাছে কমিটি বিক্রয় করতে চায়। অনৈতিক প্রস্তাবে স্বীকৃতি না দেওয়ায় তারা তাদের সিদ্ধান্ত কায়েম করছে। হেডমাস্টার কে সঙ্গে করে এবং বিগত হেডমাস্টারদের সঙ্গে দেনদরবার এর মাধ্যমে এবং তাদের সমন্বয়ে কাজগুলো করে আসছে ২৫-৩০ বছর যাবত। তারা আরো জানান স্বর্গপুর গ্রামে শিক্ষিত এবং শিল্পপতি থাকা সত্ত্বেও চক্রান্ত করে পার্শ্ববর্তী স্কুলের শিক্ষককে টাকার বিনিময়ে সভাপতি নির্ধারণ করছে এ বিষয়ে তারা উদ্ধোতন কর্মকর্তা দের এবং শিক্ষিত মহলের সহযোগিতা কামনা করছে বলে জানান তারা। যাতে স্কুলটা সুন্দর সুশৃংখল ভাবে পরিচালিত হয় এবং দেশের ভবিষ্যৎ গড়ার কারিগর হয়। সে বিষয়ে ঊর্ধ্বততম কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এই বিষয়টি নজরে নেন তারা।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমরা সকল জমিদাতাদের তালিকা করেছি। সেই সাথে স্বর্গপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে জমি দাতা সবাইকে নোটিশ দেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি । আমরা ওই স্কুলের কমিটির বিষয়ে স্বচ্ছ ভাবে কাজ করছি । যেহেতু স্কুলের শুরু থেকেই আমি সকল বিষয়গুলো জানি এবং দুর্নীতির বিষয়ে আমি তদন্ত করেছিলাম । অতএব আমি এই দুর্নীতির ভিতরে তো যাব না। আমাকে অনেকেই ভুল ভাবতে পারে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমি সঠিকভাবেই কাজ করছি। এই কমিটির বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্কুল কমিটি বোর্ডের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা সাহেব কেউ জানানো হয়েছে । তবে প্রস্তাব করা হয়েছে রেজুলেশনে এখনো তোলা হয়নি । ফাইনাল সিদ্ধান্তক্রমে রেজুলেশনে তোলা হবে। এ বিষয়ে আমি সিদ্ধান্ত দেওয়ার কেউ নয়। চেয়ারম্যান সাহেব যে সিদ্ধান্ত নিবেন সেটাই হবে। আমার এখানে কোন কিছু করার নাই।
এ বিষয়ে স্বর্গপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ সাজেদুল ইসলাম মধুর সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমাদের এখানে ছয়টি সমাজ আছে। তাদের সিদ্ধান্তক্রমেই এমনটি প্রস্তাব এনেছে তারা, এখানে আমার কিছু করার নাই । আপনার বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে? সেই নোটিশের জবাব দিয়েছেন কিনা? আইনগতভাবে কাজ করছেন কিনা? উপজেলা শিক্ষা অফিসার আপনাকে সকল জমিদাতাদের কাছে চিঠি দেওয়ার কথা বলেছে আপনি সে কাজটি করেছেন কিনা ? এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ সকল প্রশ্নের সৎ উত্তর দিতে পারেন নাই।